ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


শিলাবৃষ্টিতে শরীয়তপুরে ধানচাষীদের দুর্ভোগ


প্রকাশিত:
৭ মে ২০২৪ ২০:৫৪

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ২২:১৪

শরীয়তপুরে হঠাৎ জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে শিলাবৃষ্টির প্রভাবে মাঠে থাকা পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শরীয়তপুর জেলা শহরসহ অন্যান্য উপজেলায় ঝড়সহ শিলা বৃষ্টি হয়েছে।

জেলার কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৈশাখ মাসের শুরু থেকে দেশের অন্যান্য জেলার মতো শরীয়তপুরেও প্রবাহমান ছিল তীব্র তাপ প্রবাহ। তাপ প্রবাহের কারণে শ্রমিক সংকটে পড়ে জেলার কৃষকরা সময় মতো পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেননি। কৃষি অফিসের তথ্য মতে এবছর জেলায় ২৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৫ ভাগ ধান ঘরে তুলতে পেরেছে কৃষকরা। বাকি ৫৫ ভাগের মধ্যে ২০ ভাগ ধান এখনো কাঁচা। সোমবার দুপুর থেকে ঝড়সহ শিলা বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলায়। ঝড়সহ শিলা বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা পাকা ধান শুয়ে পড়েছে মাটিতে। এতে ধান কাটতে অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও শীলা বৃষ্টির কারণে পাকা ধান ঝড়ে পড়ে যায়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকসহ চাষীরা।

সদর উপজেলার আটং গ্রামের ফরহাদ খান একজন ভূমিহীন চাষী। তিনি অন্যের জমিতে এবছর ১২০ শতাংশ বোরো ধানের আবাদ করেছেন। মাত্র ২০ শতাংশ জমির ধান ঘরে তুলতে পারলেও শ্রমিক সংকটে পড়ে বাকি ধান এখনো তার মাঠে রয়ে গেছে। দুপুরে শীলা বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর মাঠের সব ধান শুয়ে পড়েছে।

ফরহাদ খান বলেন, আমি ঋণ করে অন্যের জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলাম। আমার সব ধান শীলা বৃষ্টিতে মাটিতে শুয়ে পড়েছে এখন ঋণ শোধ করব কীভাবে। আর কিছুদিন পরে বৃষ্টি হলে আমার এমন ক্ষতি হতো না।

নড়িয়া উপজেলার নসাশন এলাকার কৃষক মো. নুরুল আমীন বলেন, আকাশে মেঘ আসার পরেও বজ্রপাতের আশঙ্কা মাথায় নিয়ে মাঠে ধান কেটেছি। তবুও সব ধান কাটা সম্ভব হয়নি। আমার ৯০ শতাংশ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

খুলনা অঞ্চল থেকে ধান কাটার কাজ করতে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে এসেছেন মিরাজ হোসেন। তিনি বলেন, গত ৪ বছর ধরে শরীয়তপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ধান কাটার কাজ করছি। গত বছর ১৩০ মণ ধান নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলাম। শীলা বৃষ্টির কারণে ধান শুয়ে পড়েছে। এখন আর ধান কাটার কাজ তেমন ভাবে পাওয়া যাবে না। আগের মতো ধানও পাবো না।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে এবছর বোরো ধানের মৌসুমে শ্রমিক সংকট চলছে। অন্যান্য জেলার অবস্থাও একই রকম। তাপ প্রবাহ ও শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে পারেননি। অধিকাংশ মাঠে এখনও পাকা ধান রয়েছে। ঝড়সহ শীলা বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা পাকা ধান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে কৃষকরা লোকসানে পড়তে পারে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top