ঢাকা রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


কুয়াশার কারনে ভারতে বিমান চলাচলে বিঘ্ন


প্রকাশিত:
১৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১৬:৪৮

আপডেট:
১৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১৭:৪৬

মারাত্মক কুয়াশার কারণে ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরগুলোতে একের পর এক ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। কিন্তু এয়ারলাইন বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যথা সময়ে যাত্রীদের ফ্লাইট বাতিলের তথ্য দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

শত শত যাত্রী এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যমে নিজেদের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের এভিয়েশন রেগুলেটর থেকে এয়ারলাইনগুলোর প্রতি একটি ‘অ্যাডভাইজারি’ জারি করে বলা হয়েছে, ‘পর্যাপ্ত সময় আগে’ যেনো তারা তাদের ফ্লাইট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ‘যথেষ্ট সময় হাতে থাকা অবস্থায়’ যেনো ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বের তথ্য তারা যাত্রীদের জানায়।

এদিকে, এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ বলছেন, রাজধানী দিল্লিতে মারাত্মক ঘন কুয়াশার কারণে বিমানবন্দরগুলোতে বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

তবে যাত্রীরা সেটা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ এবং বিমানবন্দরগুলো থেকে যাত্রীদের সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগের অভাবে এমনটা হচ্ছে।

বিবিসি জানায়, মাঝে মাঝে বিশৃঙ্খলা এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে যাত্রীদের সঙ্গে ফ্লাইটের ক্রুদের বাকবিতণ্ডা এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।


এমন একটি ভিডিও সোমবার অনলাইনে ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় রোববার ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে যাত্রীরা বসে আছেন এবং কো-পাইলট সেটি ছাড়তে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় বিলম্ব হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন। সে সময় এক যাত্রী তার আসন ছেড়ে দৌড়ে গিয়ে ওই কো-পাইলটকে মারতে শুরু করেন। পুলিশ ওই যাত্রীকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মুম্বাই বিমানবন্দরের টার্মাকে বসে একদল যাত্রী খাবার খাচ্ছেন। ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটটির গোয়া থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে গোয়া বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বের পর সেটিকে দিল্লি না পাঠিয়ে মুম্বাই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফ্লাইটে বসে থেকে বিরক্ত ও ক্লান্ত যাত্রীরা তাই উড়োজাহাজ থেকে নেমে পাশে টার্মাকে বসেই তাদের খাবার খেয়ে নিচ্ছিলেন।

উত্তর ভারতে চলছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঘন কুয়াশা। কুয়াশার এক বিশাল চাদরে দিল্লি ঢাকা পড়ে গেছে। দৃশ্যমান্যতা কখনো কখনো শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসছে, বিশেষ করে ভোট ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত। যার ফলে গত রোববার থেকে ভারতের শত শত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বিলম্ব হচ্ছে বা বাতিল হয়ে যাচ্ছে।

দিল্লি বিমানবন্দরের ভেতর পার্কিংয়ের স্বল্পতার কারণে পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে সংস্কার কাছের জন্য একটি রানওয়ে বন্ধ রাখতে হয়েছে। ভারতের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দর এটি।


গত রোববার থেকে পরিস্থিতি বেশি খারাপ হতে শুরু করে, সোমবার যা চরম বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়। মঙ্গলবার সকালেও পরিস্থিতির উন্নতির কোনো লক্ষণ ছিল না।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো দুইদিন দিল্লে এবং উত্তরাঞ্চলের শহরগুলিতে ভারি কুয়াশা থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে।

রোববার থেকেই যাত্রীরা এক্স সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতের বিমান পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং অনেক এয়ারলাইন্সকে ট্যাগ করে ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ার নিয়ে অভিযোগ শুরু করেন।

অনেকে অভিযোগ করেন, কোনো ধরণের খাবার এমনকি পানি ছাড়াই তাদের ফ্লাইটের ভেতর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। কখন ফ্লাইট ছাড়বে সে বিষয়েও কর্তৃপক্ষ তাদের পরিষ্কার করে কিছু জানাচ্ছে না।

সোমবার বিমান পরিবহনমন্ত্রী সিন্ধিয়া এক্স এ লম্বা এক পোস্টে বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতির জন্য দিল্লির ‘অপ্রত্যাশিত কুয়াশা’ কে দায়ী করেন।

শুধু বিমান পরিবহনই নয় বরং ঘন কুয়াশার কারণে ভারতে ট্রেন চলাচলও ব্যহত হচ্ছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top