ঢাকা বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


ভারতের গ্রামে এক-চতুর্থাংশ পরিবারে এখনো শৌচাগার নেই


প্রকাশিত:
২৭ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫০

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫১

ফাইল ছবি

পরিবেশ টিভি: খোলা জায়গায় মলত্যাগ বন্ধে সফল হতে পারল না ভারত। নতুন এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারতের গ্রামাঞ্চলে এখনো এক-চতুর্থাংশের বেশি পরিবারের শৌচাগার সুবিধা নেই। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার এক সংবাদে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রায় শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের প্রায় শতভাগ মানুষ এখন টয়লেট ব্যবহার করছে। যদিও অনেক টয়লেটের মান নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে।

২০১৮ সালে ভারতের গ্রামাঞ্চলের ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ পরিবার ও শহরাঞ্চলের ৯৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের টয়লেট সুবিধা ছিল। শনিবার ‘এনএসওর ড্রিংকিং ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাউজিং কন্ডিশন ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক মাসের কিছু বেশি সময় আগে ভারতের গ্রামাঞ্চল উন্মুক্ত মলত্যাগমুক্ত হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। এরপর গত শনিবার এ তথ্য পাওয়া গেল।
পরিবারের সিংহভাগ সদস্য যদি টয়লেট ব্যবহার করে থাকেন, তা হলে সেই পরিবারের টয়লেট সুবিধা আছে বলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে পরিবারের নিজস্ব টয়লেট, অভিন্ন টয়লেট ও পাবলিক টয়লেটও বিবেচিত হয়েছে।

ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ২০১৪ সালে স্বচ্ছ ভারত মিশন ঘোষণা করে চলতি বছরের ২ অক্টোবরের মধ্যে দেশের গ্রামাঞ্চলকে শতভাগ টয়লেটের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্য ঘোষণা করে। গ্রামের সব পরিবারের টয়লেট সুবিধা নিশ্চিত করাই ছিল এর লক্ষ্য। ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন।

প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, ২০১৮ সালে উত্তর প্রদেশ ও ওডিশার গ্রামাঞ্চলের অর্ধেক পরিবারে টয়লেট সুবিধা ছিল না। এর অর্থ হলো, এরা এখনো উন্মুক্ত স্থানে মল ত্যাগ করছে। তবে সেখানের যে উন্নতি হয়নি তা নয়, ২০১২ সালে এই দুই প্রদেশের গ্রামাঞ্চলে যথাক্রমে ৭৫ ও ৮১ শতাংশ পরিবারের টয়লেট সুবিধা ছিল না। অন্যদিকে গুজরাটের মতো উন্নত প্রদেশের গ্রামেও ২০১৮ সালে ১৪ শতাংশ পরিবারের টয়লেট সুবিধা ছিল না।

তবে ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে ভারতে টয়লেট ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১২ সালের জরিপে ভারতে গ্রামাঞ্চলে মাত্র ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৯১ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের টয়লেট সুবিধা ছিল। সামগ্রিকভাবে ২০১৮ সালে ভারতের ২০ শতাংশ পরিবারের টয়লেট সুবিধা ছিল না, যেখানে ২০১২ সালে তা ছিল ৬৩ শতাংশ।
এদিকে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম বন্ধ করায় ভারতীয় উপমহাদেশের জনস্বাস্থ্যের কতটা উন্নতি হয়েছে, খড়্গপুর আইআইটির এক গবেষণায় তা জানা গেছে। দেখা গেছে, যেখানেই প্রকাশ্যে শৌচ কাজ বন্ধ করার জন্য প্রচার চালানো হয়েছে কিংবা বাড়ি বাড়ি শৌচাগার বানিয়ে দিয়ে বাসিন্দাদের তা ব্যবহার করতে জোর করা হয়েছে, সেখানেই অসুখ-বিসুখ কমেছে।

নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে আইআইটির ‘স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের গবেষকেরা দেখিয়েছেন, ১৯৯০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ভূগর্ভস্থ পানিতে ফিক্যাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এর ফলে কমেছে আন্ত্রিক সংক্রমণ এবং ওই সংক্রমণে মৃতের সংখ্যাও। উল্লেখ্য, এই ব্যাকটেরিয়ার জন্য সাধারণ আন্ত্রিক পর্যন্ত মারাত্মক আকার নিতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

ভারতের ড্রিংকিং ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন মন্ত্রণালয় এই জরিপে যুক্ত ছিল। তারা অবশ্য জরিপের ফলাফলের কিছু দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা বলছে, প্রশাসনের তথ্যের সঙ্গে এই জরিপের তথ্যের মিল নেই। আবার ২০১৭-১৮ সালে বিশ্বব্যাংকের এক জরিপে দেখা গেছে, ভারতের গ্রামাঞ্চলে টয়লেট ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ৯৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
২০১৪-১৫ থেকে ২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার স্বচ্ছ ভারত মিশনে রাজ্য সরকারগুলোকে ৩৬ হাজার কোটি রুপি দিয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top