ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


জ্বালানি নিরাপত্তার লক্ষ্যে জার্মানিতে সৌরবিদ্যুতের প্রসার


প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:০২

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৬

 

বিশ্বজুড়ে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদন বাড়াতে অনেক জমির প্রয়োজন। জার্মানির পূর্বাঞ্চলে সৌর বিদ্যুৎ প্লান্টের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানালেও অনেক চাষি জমি ইজারা দিয়ে স্থায়ী আয়ের ফলে সন্তুষ্ট।জার্মানির পূর্বাঞ্চলের ছোট গ্রাম হোয়েনসাটেন। জনবিরল এই বসতির ধারেই বিশাল অরণ্য। সামরিক কার্যকলাপের জন্য বহু দশক ধরে সেখানে প্রবেশ নিষেধ ছিল। ফলে প্রকৃতি নিজস্ব ছন্দে বিকশিত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হলগার লেমান বলেন, সেখানে পেঁচা, কালো সারস আছে। আমি ব্যাজারও দেখেছি। ৩০ বছর ধরে প্রকৃতি বিনা হস্তক্ষেপে বেড়ে উঠেছে। জায়গাটা প্রাণে ভরপুর। অদূর ভবিষ্যতে অবশ্য সেখানে পরিবর্তন আসছে। কারণ এক সোলার প্লান্ট গড়ে তুলতে ৩৭০ হেক্টর, অর্থাৎ পাঁচশোরও বেশি ফুটবল মাঠের আয়তনের সমান জঙ্গল কেটে ফেলা হবে। কাছেই ওডারব্যার্গ শহরের হনারারি মেয়র মার্টিনা হেনেল অবশ্য সে কারণে অসন্তুষ্ট।

তিনি বলেন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করার লক্ষ্যে আমাদের একটা জঙ্গল কেটে ফেলতে হবে, এমন সিদ্ধান্তের কথা শুনে আমি আতঙ্কিত হয়েছিলাম। ছাদ ও অন্যান্য কত জায়গায়ই না সেটা করা যায়! জঙ্গল ধ্বংস করে জ্বালানি সরবরাহের উন্নতি একেবারেই উচিত নয়। বিনিয়োগকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনে নিজের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছেন। বাসিন্দারা এক নাগরিক উদ্যোগ গড়ে তুলতে চান। জার্মানির পূর্বাঞ্চলে ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে সম্প্রতি সংঘাতের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। কারণ সেখানে অনেক এলাকা সৌর জ্বালানির জন্য উপযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিবাদ জানালেও ইয়ুর্গেন গিসের মতো চাষির কাছে সৌর জ্বালানি শাপে বর হয়ে উঠতে পারে। কারণ জ্বালানি কোম্পানিগুলিকে তাঁরা চাষ বাবদ আয়ের তিন গুণ বেশি মূল্যে ইজারা দিতে পারেন। ইয়ুর্গেন গিসে এমনই এক চাষি।

তিনি বলেন, চাষি হিসেবে আমাদের সার, কীটনাশক, বীজ সবকিছুর জন্য আগাম মূল্য চোকাতে হয়। ফসলের মূল্য কী হবে আমরা তা কখনোই আগেভাগে জানতে পারি না। সেটা বড় ঝুঁকি। সেই সূত্রে সৌর কোম্পানিগুলি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রশ্ন করলো, তাদের প্রস্তাবে আমাদের আগ্রহ আছে কিনা। অবশ্যই আগ্রহ রয়েছে। কারণ এর ফলে আমার কর্মকাণ্ডের জন্যও নিরাপত্তা আসছে।

বার্লিনের উত্তরে টেম্পেলফেল্ডে এলাকায় ১০০ হেক্টর জুড়ে সৌর প্যানেল লাগানো হবে। সেখানেও স্থানীয় পর্যায়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে, কারণ এর ফলে কিছু মানুষের আয় হচ্ছে। যেমন ঘোড়া পালনের একটি ক্ষেত্র এলাকার কিছুটা বাইরে থাকায় ভবিষ্যতের প্লান্টের কাছেই সেটির অবস্থান হবে।

সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ইয়ুলিয়ানে উলিশ বলেন, আমার মতে, তখন মানুষ ভেবে দেখবেন, আদৌ তাঁরা আমাদের এখানে এসে ঘোড়ায় চড়বেন কিনা। নাকি অন্য কোনো জায়গার খোঁজ করবেন, যেখানে তাঁরা ঘোড়ায় চেপে মাঠ বরাবর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন। আশার কথা, প্রকল্পের প্রবক্তা ও বিরোধীদের মধ্যে সংলাপ গড়ে উঠেছে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top