ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


সুন্দরবনের ক্ষতিসাধনকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান


প্রকাশিত:
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১০:৫৬

আপডেট:
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১১:০৯

পরিবেশ টিভি: যারা বুঝে বা না বুঝে সুন্দরবনের ক্ষতিসাধন করছে তাঁদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকেই রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. বশিরুল-আল-মামুন।

আজ বৃহস্পতিবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই আহ্বান জানান তিনি। সুন্দরবন দিবস পালন উপলক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিনে সুন্দরবন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পালিত হয় সুন্দরবন দিবস।

২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে বশিরুল-আল-মামুন বলেন, ‘আমরা যারা সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার মানুষ, তাদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ২০০৭ ও ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় সাক্ষ্য দেয় যে, সুন্দরবন পরম মাতৃত্বে আমাদের আগলে রেখেছিল বলেই আমরা কম ধ্বংসের শিকার হয়েছি। এ প্রমাণ শুধুই এবারের নয়, এটা শতাব্দী থেকে শতাব্দী পর্যন্ত একই ধারায় চলে আসছে। আমরা সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি করলেও সুন্দরবন সব সময় শুধুই দিয়ে গেছে, বিনিময়ে সে পায়নি কিছুই।’

ডিএফও বলেন, এখন সময় হয়েছে সুন্দরবনের ক্ষতিসাধনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। শুধু বন বিভাগের সামান্য লোকবল ও সীমিত সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ওই ধ্বংস প্রয়াস রুখে দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকার মানুষেরও সুন্দরবন সংরক্ষণে সমর্থন ও অংশগ্রহণ প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবনের গুরুত্ব তুলে ধরে বলা হয়, সুন্দরবন আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটি এখন বিশ্ব-ঐতিহ্য। জগদ্বিখ্যাত এ প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকারী হওয়াতে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে আগলে রেখেছে সুন্দরবন। অনেকটা মায়ের কোলে একটি শিশু যেমন পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে, তেমনি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক বিরাট এলাকা সুন্দরবনকে অবলম্বন করে নিরাপদ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বরাবরের মতো এবারও সুন্দরবন দিবসের মূল অনুষ্ঠানটি হবে খুলনায়। তাই দিবসটি উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বর্তমানে বন বিভাগ ও সুন্দরবন একাডেমির যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত সুন্দরবন দিবস পালনের উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন, খুলনা প্রেসক্লাব, সুন্দরবন-সংলগ্ন সাংবাদিক সমাজ এবং প্রকৃতিপ্রেমীসহ আপামর মানুষ। নানা আনুষ্ঠানিকতায় সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে। ইতিমধ্যে বুধবার খুলনার উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে ‘সুন্দরবনকে যেমন দেখতে চাই’ শীর্ষক শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় সুন্দরবন দিবসের মূল অনুষ্ঠানও উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত হবে। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে সকাল ৯টায় শহীদ হাদিস পার্ক থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির, রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ প্রমুখ।

সূত্র: প্রথম আলো


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top