তাপপ্রবাহের কবলে কাশ্মীর, দিল্লি-কলকাতার তাপমাত্রাকেও ছাড়িয়েছে উপত্যকা
গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা উপত্যকা কাশ্মীরেও। যে ঠান্ডা উপভোগ করার জন্য কাশ্মীরে ছোটে গোটা ভারত ও বিশ্বের মানুষ, সেখানে এখন গায়ে পোশাক রাখা যাচ্ছে না! ভারতের কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে দিনের তাপমাত্রা রেকর্ড-উচ্চতায় পৌঁছেছে। এমনকি দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে কাশ্মীরের শ্রীনগরে সবচেয়ে উষ্ণতম জুলাই দিনটি অনুভব হয়েছে বুধবার। জম্মু-কাশ্মীরের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা এমনটাই জানিয়েছেন।
৩ জুলাই বুধবার শ্রীনগরে সর্বোচ্চ ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়- যেটা ১৯৯৯ সালের পর ২৫ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল। সেসময় তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, এই মৌসুমে শহরে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৬ ডিগ্রি বেশি ছিল। বুধবার গোটা ভারতের অন্য শহরের তুলনায় বেশি গরম ছিল কাশ্মীরে। এদিন দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কলকাতায় ৩১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মুম্বাইয়ে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বেঙ্গালুরুতে ২৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
গত মঙ্গলবার শ্রীনগর শহরের তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং কলকাতার চেয়েও বেশি গরম অনুভূত হয়েছিল শ্রীনগরে। কারণ, কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেক্ষেত্রে ওইদিন শ্রীনগরে জুলাই মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রেকর্ড করা হয়।
উপত্যকার অন্যান্য জায়গাতেও প্রচণ্ড তাপমাত্রা দেখা যায়। কাজিগুন্ডে পারদ ছিল ৩৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এবং কুপওয়ারায় তাপমাত্রা ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার উপত্যকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যেটি স্বাভাবিকের থেকে অন্তত ৪.৫ থেকে ৬.৯ ডিগ্রি বেশি।
দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং জ্বলন্ত তাপ অনুভূত হয়েছে উপত্যকাজুড়ে। এর ফলে অনেক এলাকায় পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জম্মু-কাশ্মীরের স্বাস্থ্য দফতরও একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে। স্কুল শিক্ষা বিভাগ ইতোমধ্যেই ৮ জুলাই থেকে উপত্যকার স্কুলগুলোর জন্য আগামী ১০ দিনের গ্রীষ্মকালীন ছুটি ঘোষণা করেছে।
প্রচণ্ড গরমের ফলে উপত্যকার সাধারণ মানুষও ঘরের মধ্যেই থাকছেন। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাইরে বেরোচ্ছেন না। এদিকে গরমের ফলে কাশ্মীরের মতো জায়গায় হঠাৎ করেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র (এসি), পাখা এবং কুলারের মতো যন্ত্রের বিক্রি বেড়েছে।
সাধারণ যাত্রীরাও বিশেষ করে শহরের মধ্যে যাতায়াত করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকেই নিজেদের যাত্রা আরামপদ করতে এসি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার দিকে ঝুঁকছেন।
বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কারণ, অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৫ থেকে ৬ জুলাই থেকে উপত্যকার অনেক জায়গায় কিছু জায়গায় ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ৭ জুলাইও হালকা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ৮ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: