ঢাকা বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১

ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য দ্বারা দূষিত নদীর পানিঃ হুমকিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য


প্রকাশিত:
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৪৬

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫১

ওষুধ এবং ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন পণ্য নদীতে মেশার কারণে বিশ্বের নদীগুলোতে মারাত্মক দূষণ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশ ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে বিষয়টি। ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্কের এক গবেষণায় এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ওই গবেষণায় নদীর পানিতে পাওয়া গেছে প্যারাসেটামল, নিকোটিন, ক্যাফেইন, এপিলেপ্সি বা মৃগী রোগ বিষয়ক এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
বিশ্বব্যাপী বড় পরিসরে করা হয়েছে এই গবেষণা। পূর্ণাঙ্গ গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস’ জার্নালে।

গবেষণায় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি দূষিত হয়েছে পাকিস্তান, বলিভিয়া এবং ইথিওপিয়ার নদীগুলোর পানি। সবচেয়ে ভাল আছে আইসল্যান্ড, নরওয়ে এবং অ্যামাজনের রেইনফরেস্টের নদীগুলোর পানি।
নদীতে থাকা সাধারণ ফার্মাসিউটিক্যালের যৌগের প্রভাব সম্পর্কে এখনও অনেকাংশে অজানা। তবে এটি এরই মধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত যে, জন্মনিরোধক ব্যবস্থা পানিতে দ্রবীভূত হওয়ার ফলে মাছের বৃদ্ধি ও প্রজনন ক্ষমতায় ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, নদীতে ক্রমবর্ধমান হারে এন্টিবায়োটিকের উপস্থিেিত মেডিসিন হিসেবে তার কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ হতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্কের এই গবেষণায় কমপক্ষে ১০০টি দেশ থেকে কমপক্ষে ১০০০ স্থানের পানিকে নমুনা হিসেবে নেয়া হয়েছে। সার্বিকভাবে ২৫৮টি নদীর মধ্যে কমপক্ষে এক চতুর্থাংশের পানিতে ‘সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান’ পাওয়া গেছে। এটা এমন এক মাত্রায় আছে, যা জলজ প্রাণিদের জন্য অনিরাপদ।

এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. জন উইলকিনসন। তিনি বলেছেন, সাধারণত যা ঘটে, তাহলো আমরা এই রাসায়নিক উপাদানগুলো গ্রহণ করি। আমাদের ওপর এর কিছু প্রভাব আছে। আর তা আমাদের দেহে অবস্থান করে। আমরা জানি যে, বর্তমান সবচেয়ে আধুনিক পানি শোধন কেন্দ্রগুলোও এসব উপাদানকে পুরোপুরি আলাদা করতে সক্ষম নয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি শনাক্ত করা হয়েছে এমন দুটি ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান হলো কারবামোজেপাইন এবং মেটফরমিন। প্রথমটি ব্যবহার করা হয় মৃগী রোগী এবং স্নায়ু প্রদাহের চিকিৎসায়। আর দ্বিতীয়টি ব্যবহার করা হয় ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়। ক্যাফেইন এবং নিকোটিনের পাশাপাশি ব্যথানাশক প্যারাসিটামলের মতো কথিত ‘লাইফস্টাইল কনজিউমেবলস’-এর উচ্চ ঘনত্ব পাওয়া গেছে।

আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া বিরোধী ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় আর্টিমিসিনেন। সেখানকার পানিতে এই উপাদান উচ্চ মাত্রায় পাওয়া গেছে। বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারের জলজ অর্থনীতিবিদ ড. ভেরোনিকা এডমন্ডস-ব্রাউন বলেছেন, আমরা বলতে চাই- নদীর পানিতে এসব ফার্মাসিউটিক্যালসের উপস্থিতি নেতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে। এক্ষেত্রে গবেষণা হতে পারে। খুব কমই গবেষণা হয়েছে এ নিয়ে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top