দুর্যোগ মোকাবেলার আহবান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর
ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছাস, নদী ভাঙ্গনের মত নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে আসছে বাংলাদেশ। তাই দুর্যোগ কবলিত জনগনের পাশে থেকে তা মোকাবেলায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের এ সফলতাকে এগিয়ে নিতে মন্ত্রণালয়ের সাথে স্থানীয় প্রশাসন এবং বেসরকারী সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজের আহবান জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নে ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ’ বিষয়ে আয়োজিত মুক্ত আলোচনায় এ আহবান জানান তিনি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সমন্বিতভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা এনে দিতে পারে আরও বেশি সফলতা। এ কারণে দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সাথে তাল মিলিয়ে এনজিও, বেসরকারী সংস্থা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার তাগিদ দেন তিনি। দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান, বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙ্গন এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে দ্বিতল বিশিষ্ট ২৩০টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে । এতে প্রায় ৯২ হাজার মানুষ এবং ২৩ হাজার গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে । ২০১৮-২০২২ মেয়াদে ৪২৩ টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে যৌথভাবে আয়োজিত মুক্ত আলোচনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উন্নয়ন সহযোগি সংস্থা ’ফ্রেন্ডশিপ’-এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান। আলোচনা করেন সংস্থার জেষ্ঠ্য পরিচালক কাজী এমদাদুল হক। দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মান ও ব্যবস্থাপনা, লবনাক্ত এলাকায় সুপেয় পানির উৎস তৈরি ও সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভাঙ্গন রোধে বৃক্ষায়ন-সহ বিভিন্ন কর্মসূচীর সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন তারা। সফলভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় জনগনকে সাথে নিয়ে জনপ্রতিনিধি এবং এনজিওগুলোর সাথে সম্পর্ক তৈরিতে গুরুত্ব দেন আলোচকরা। এজন্য সবাই মিলে সমন্বিতভাবে কাজের তাগিদ দেন তারা।
বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অবঃ) এবি তাজুল ইসলাম বলেন, উপকূলীয় এলাকায় ঘুর্ণিঝড়-জলোচ্ছাস, নদী অববাহিকা এলাকায় বন্যা-নদীভাঙ্গন-সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে সরকার। তাই সবার উচিৎ সরকারের সাথে সমন্বয় করে দুর্যোগ মোকাবেলায় অংশ নেয়া।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোঃ মোহসীন জানান, পুরো দেশ জুড়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং পূর্বাভাস ব্যবস্থায় রাডারগুলোর আধুনিকায়ন করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় পরিচালনা করা হচ্ছে ৫ হাজারের বেশি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। আলোচনায় বক্তব্য রাখেন; বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা-সহ বিভিন্ন দুর্যোগ কবলিত জেলার ২০ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ২০জন এনজিও প্রতিনিধি। ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ’ নিয়ে আয়োজিত দিন ব্যাপি আলোচনায় উঠে আসে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন কলাকৌশল। স্থানীয় জনগন উদ্ভাবিত এ কলাকৌশলগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন বক্তারা।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: