ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী নগরীতে বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে বহুতল ভবন


প্রকাশিত:
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৬

ফাইল ছবি

পরিবেশ টিভি: রাজশাহী নগরীতে বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে একের পর এক নির্মিত হচ্ছে নকশাবহিভর্‚ত বহুতল ভবন। ফলে ঝুঁকির মধ্যে পড়লেও আশপাশের ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পাচ্ছে না। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) দফতরে প্রায় প্রতিদিন এমন অভিযোগপত্র জমা পড়লেও রহস্যজনক কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আরডিএ থেকে পাঁচতলার অনুমোদন নিয়ে সাততলা ভবন আবার সাততলার অনুমোদন নিয়ে দশতলা ভবনও নির্মিত হচ্ছে একের পর এক। এছাড়া বিল্ডিং কোড উপেক্ষা করে সড়ক ঘেঁষে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী রাস্তা ও ফাঁকা জায়গা ছাড়ার নির্দিষ্ট বিধি থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না।

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর লক্ষীপুর এলাকায় ১৩ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবন নির্মাণ শুরু করেছে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। মাটির নিচে তিনতলাসহ ১৩তলা ভবনটির পাইলিং কয়েক মাস আগে শেষ হয়েছে। নিয়মানুযায়ী ফাঁকা জায়গা না ছাড়ায় পপুলারের মূল ভবন নির্মাণের সময় পাশের চৌরঙ্গী মসজিদ ভবনটি পাশের সেঞ্চুরি আবাসিক হোটেল ও দুটি ভবনের গায়ে হেলে পড়েছে। নির্মাণাধীন পপুলার ভবনের পাশের তিনটি ভবনে ফাটল ধরায় সংশ্লিষ্ট ভবন মালিক ও মসজিদ কমিটি আরডিএ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবরও তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু দুই কর্তৃপক্ষ নীরব থাকায় পপুলার কর্তৃপক্ষ সবকিছু উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত সেঞ্চুরি হোটেলের মালিক আনোয়ার মোস্তফা জানান, বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে পাশের ভবন থেকে পাঁচ ফুট ফাঁকা জায়গা রেখে ভবন নির্মাণের কথা। কিন্তু পপুলার পাশের সবকটি ভবনের কোল ঘেঁষে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে পাশের তিনটি ভবনে ছোট-বড় অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। তিনি আরও জানান, পাঁচতলা মসজিদ ভবনে ফাটলের কারণে সেখানে মুসল্লির সংখ্যা কমে গেছে। সেঞ্চুরি হোটেলে প্রতিদিন ১০০-১২০ জন বোর্ডার থাকেন। হোটেল ভবনের নিচে ৫০টি দোকান রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন শত শত মানুষের আনাগোনা। এসব মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার মিলছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরডিএ’র অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, বিল্ডিং কোড মেনে চলার শর্তে পপুলারকে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পপুলার কর্তৃপক্ষ বিধি মানছে না বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আরডিএ’র পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে তাদের সতর্কও করা হয়েছে। নিয়ম না মানলে তাদের ভবন নির্মাণকাজ বন্ধ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। তিনি জানান, মহানগরীতে নতুন নতুন বহুতল ভবন হচ্ছে। বিল্ডিং কোড লঙ্ঘনের অনেক অভিযোগ আসছে।

আরডিএ’র অথরাইজড অফিসার জানান, লক্ষীপুর এলাকায় ২২তলা ডক্টরস ভবন নির্মাণের সময় পাশের ভবনে ফাটল দেখা দেয়। এ কারণে ভবনটির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। পাশের ভবন মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে এবং যথাযথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে এখন তারা ভবন নির্মাণ করছে। পপুলার ভবন নির্মাণে আরডিএ’র কঠোর নজরদারি রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে পপুলারের প্রকৌশলী মোর্শেদ আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। পপুলার ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড লঙ্ঘনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, বিষয়টি তাদের গোচরে রয়েছে। ইমারত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে স্পট পরিদর্শন ও মতামত গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছি। কোথাও বিচ্যুতি হলে পপুলার ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ করা হবে।


বিষয়: রাজশাহী



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top