রাজশাহীর বাঘার চরাঞ্চলের পেঁয়াজের বাম্পার ফলন
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বাঘা উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৩ হাজার হেক্টর। যা অতিক্রম করে চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে অর্ধেক এর বেশি লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছিল উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। সে মোতাবেক চরবাসীদের অনেকেই আগাম পেঁয়াজের চাষ করেছেন। তাদের দেওয়া তথ্য মতে, বাঘার চরাঞ্চলের পেঁয়াজ এর গুনগতমান ভালো। এ কারণে এখান থেকে প্রতি মৌসুমে বাস এবং ট্রাক যোগে পেঁয়াজ চালন দেয়া হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
চরাঞ্চলের কৃষক বাবলু দেওয়ান ও আকছেন শিকদার জানান, তারা গত বছর ইচ্ছে থাকার পরেও বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় উপযুক্ত জমি না পাওয়ায় খুব বেশি পেঁয়াজ চাষ করতে পারেন নি। এ দিক থেকে এবার চরাঞ্চলের অসংখ্য কৃষক অনুকূল আবহাওয়া ও উপযুক্ত মাটি পেয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তাদের দাবি, গত বছর ভারত থেকে (এলসি) পেঁয়াজ আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম পড়ে গিয়েছিল। এবার এখন পর্যন্ত পেয়াজের বাজার সন্তোষজনক রয়েছে। এটি যেন চলমান থাকে।
চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি গত বছর অত্র মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে বাজার মূল্য পেয়ে ছিলেন ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি। কিন্তু এবার জমি থেকে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছেন। এ থেকে তিনিসহ প্রায় সকল কৃষকই লাভের মুখ দেখার স্বপ্ন দেখছেন।
এদিকে সমতল এলাকার বাউসা গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক ও আড়ানীর মুক্তার আলী জানান, তারা প্রতি বছর কম-বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষাবাদ করে থাকেন। বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার মূল্য ভাল দেখে তাদের ভালো লাগছে। তাদের মতে, সরকার যদি এখন থেকে পেঁয়াজের বাজার ধরে রাখতে পারে তাহলে সামনের মৌসুমে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। আর যদি না পারে, তাহলে উৎপাদন কমে যাবে। এ ক্ষেত্রে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিবে এবং অন্যদেশ থেকে সরকারকে পেঁয়াজ আনতে হবে।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লা সুলতান জানান, এ বছর দেশের সর্বত্রই কম-বেশি পেঁয়াজের চাষ-আবাদ হওয়ায় উৎপাদন বেড়ে গেছে। এর ফলে বাজারমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। তার মতে, বাঘার সমতল এলাকায় যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় তার চেয়ে অনেক বেশি উৎপন্ন হয় উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। তিনি পেঁয়াজ চাষাবাদের জন্য কৃষকদের সরকারিভাবে বীজ প্রণোদনা সরবরাহ করা থেকে শুরু করে নানা রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: